Search This Blog

ওয়েব থ্রি, মাইক্রোব্লগিং সোশ্যাল কমিউনিটি

Tuesday, August 16, 2011

যোগাযোগ এখন নতুন মাত্রায়: ওয়েব থ্রি, মাইক্রোব্লগিং সোশ্যাল কমিউনিটি


ফেসবুক: যেন এক রাষ্ট্র বিশেষ।

ফেসবুক: যেন এক রাষ্ট্র বিশেষ।
ফেসবুক যদি একটি দেশ হত তাহলে এটি হত বিশ্বের চতুর্থ বৃহত্তম রাষ্ট্র। ৪০ কোটির মত ব্যবহারকারী নিয়ে এখনও বিপুল বিক্রমে অব্যাহত আছে ফেসবুকের জয়যাত্রা। একইভাবে বলতে হয় টুইটার আর লিংকডইন-এর মত ওয়েব সেবার কথাও। ব্যক্তি পর্যায়ই এদের জনপ্রিয়তার মূল কেন্দ্র হলেও প্রাতিষ্ঠানিক পর্যায়েও এখন এদের দারুণ গ্রহণযোগ্যতা ও ব্যবহার। অনেক প্রতিষ্ঠান এখন যেমন লিংকডইনকে ব্যবহার করে কর্মী খুঁজছে, তেমনি নতুন ক্রেতা বা ক্লায়েন্টকে আকৃষ্ট করার জন্য ব্যবহার করছে টুইটার বা ফেসবুককে। আমরা এখনও জানি না, পরিবর্তনের এ ধারা আমাদের দূর বা অদূর ভবিষ্যতে ঠিক কোথায় নিয়ে যাবে, তবে একটা ব্যাপার পরিষ্কার। ওয়েব ব্রাউজ করতে আমাদের এখন আর পিসি বা ল্যাপটপের ওপরই নির্ভর করতে হয় না, মোবাইল ফোন, গেমিং কনসোল, এমনকি টেলিভিশন থেকেও এখন ওয়েব ব্রাউজ করা সম্ভব। সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং উদ্যোক্তাদের ক্রমাগত চেষ্টায় এখন যেখানে সেখানে, যে কোনো ডিভাইস থেকে প্রবেশ করা যাচ্ছে তাদের নেটওয়ার্কে। কম্পিউটার আর অনিবার্য বা অপরিহার্য থাকছে না।



মাইক্রোব্লগিং: যোগাযোগের এক জনপ্রিয় মাধ্যম।সবকিছুই যখন মোবাইল

মাইক্রোব্লগিং: যোগাযোগের এক জনপ্রিয় মাধ্যম।
টুইটারকে মাইক্রোব্লগিং সেবা বলা হয়। এই মাইক্রোব্লগিং হঠাৎ করে এতটা জনপ্রিয় হয়ে যাবার মূল কারণ হল, একেবারে শুরু থেকেই এরা মোবাইল ফোন ইউজারদেরকে টার্গেট করে এগিয়েছে। তারা বুঝতে পেরেছিল, সামাজিক যোগাযোগের পুরো শক্তিকে যদি ব্যবহার করতে হয় তাহলে মানুষ যেখানে, যে অবস্থায় থাকুক, তাকে সামাজিক যোগাযোগের সুবিধা দিতে হবে। আজ টুইটারের সেবা সবচেয়ে বেশি ব্যবহার করা হয় মোবাইল ডিভাইস থেকে। আর এ সূত্র ধরে লোকেশন-বেজড সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং-এর প্রকোপ ও ব্যবহারও বাড়ছে।  টুইটার খুব সহসাই জিও-টুইট নামের একটি সেবা শুরু করবে, যার মাধ্যমে ব্যবহারকারীরা তাদের টুইট বা বার্তার সঙ্গে সঙ্গে তাদের অবস্থানও জানিয়ে দিতে পারবে। এদিকে ফটোওয়াল নামে একটি প্রতিষ্ঠান যখনই কোনো ঘটনা ঘটছে তখনই এর লাইভ  মিডিয়া স্ট্রিম প্রচার শুরু করার ঘোষণা দিয়েছে। এর মাধ্যমে মোবাইল ফোন ব্যবহারকারীরা বিভিন্ন ধরনের জিও-ট্যাগ এবং ভয়েস-ট্যাগ সমৃদ্ধ লাইভ ফটো একটি আকর্ষণীয় এবং অনুসন্ধানযোগ্য ওয়েব সাইটে পাঠাতে থাকবে। এখান থেকে উৎসাহী ব্যক্তিরা এসব ছবি সংগ্রহ ও ভাগাভাগি করবে। এর সাহায্যে মোবাইল মিডিয়াকে একই সঙ্গে একাধিক সামাজিক যোগাযোগ সেবায় (যেমন ফেসবুক, টুইটার ও ফ্লিকার) আপলোড করা যাবে।


সোশ্যাল টিভি। বদলে দিতে যাচ্ছে টেলিভিশন দেখার অভ্যাস।


সোশ্যাল টিভি। বদলে দিতে যাচ্ছে টেলিভিশন দেখার অভ্যাস।সোশ্যাল টিভি


আত্মীয় বন্ধু পরিজন নিয়ে একত্রে দেখলেই আসলে টিভি দেখার আসল মজাটা পাওয়া যায়। কিন্তু সব সময় কি আত্মীয় পরিবার পরিজনের সান্বিধ্যে থাকা যায়? যায় না। এবার কিন্ত সে সুযোগ করে দিতে টেলিভিশনকে কেবল ইন্টার‌কটিভই নয়, ‘সোশ্যাল’ও করে তোলা হচ্ছে। যেমন, অরেঞ্জ নামে একটি কোম্পানি টুইটারের সঙ্গে মিলে টুইটারকে অরেঞ্জ-এর আইপি টিভি প্ল্যাটফর্মের সঙ্গে ইন্টিগ্রেট করে নিচ্ছে; ফলে টেলিভিশনে বিভিন্ন প্রোগ্রামের সঙ্গে সঙ্গে চলতে থাকবে টুইটারফিডও, যাতে সৃষ্টি হবে একটি দারুন ইন্টার‌কটিভ পরিবেশের।

একইভাবে আরো অনেক কোম্পানি এমন সব সফটঅয়্যার তৈরি করছে যা সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং সেবাকে টেলিভিশনের মধ্যে এনে স্থান করে দিচ্ছে।



ওয়েব 3.0 আসছে... আপনি প্রস্তুত তো?


ওয়েব 3.0 আসছে... আপনি প্রস্তুত তো?ওয়েব ৩.০ ওয়েব ৩.০ নিয়ে এরই মধ্যে জোরেশোরে কথা শুরু হয়ে গেছে। ওয়েব ৩.০-র সঙ্গে সম্পর্কিত আরেকটি টার্ম হচ্ছে সিমেনটিক ওয়েব। সিমেনটিক ওয়েব হচ্ছে ওয়ার্ল্ড ওয়াইড ওয়েবের একটি নতুন রূপ বা মাত্রা যাতে ওয়েবে প্রাপ্ত বিভিন্ন তথ্য ও সেবার অর্থ বা সিমেনটিক্স ঠিক করে দেয়া হয়। ফলে ওয়েব ইউজারদের তথ্য চাহিদাগুলো বুঝতে এবং ব্যাখ্যা করতে পারে। ঠিক যেভাবে মানুষও একটা কিছু থেকে আরেকটার পার্থক্য নিরূপণ করতে পারে, অন্তর্নিহিত অর্থ বুঝতে পারে। ওয়ার্ল্ড ওয়াইড ওয়েবের জনক এবং World Wide Web Consortium-এর প্রতিষ্ঠাতা টিম বার্নার্স লি ওয়েবেক দেখতে চান উপাত্ত, তথ্য ও জ্ঞানের একটি সর্বজনীন মাধ্যমে হিসেবে। আর তাঁর এই চিন্তা বা ভিশন থেকেই আসলে ওয়েব ৩.০ কনসেপ্টের উদ্ভব।

আমরা জানি ওয়েব পেজ সাধারণ লেখা হয় এইচটিএমএল-এ, যা তথ্যের কাঠামো বা বিন্যাস কেমন হবে তা ঠিক করে দেয়। অর্থাৎ তথ্য কিভাবে প্রদর্শিত হবে তা ঠিক করে, এর অর্থ কি হবে তা নয়। কিন্তু কম্পিউটার যদি তথ্যের অর্থও বুঝতে পারত তাহলে আমরা আরো অনেক ভালভাবে আমাদের প্রযোজনীয় তথ্যগুলো অনুসন্ধান করে বের করতে পারতাম।

সিমেনটিক ওয়েবের মূলে আছে ডিজাইন সংক্রান্ত নীতিমালার একটি সেট এবং কিছু অগ্রসর প্রযুক্তি। এর বেশির ভাগই এখনও উন্নয়নের পর্যায়ে আছে, অদূর ভবিষ্যতেই ধীরে ধীরে এদের ব্যবহার দেখা যাবে। সিমেনটিক ওয়েবের অন্যান্য উপাদানের মধ্যে আছে কিছু স্পেসিফিকেশন, যার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে রিসোর্স ডেসক্রিপশন ফ্রেমওয়ার্ক (আরডিএফ),RDF/XML, N3, Turtle, NTriples- এর মত কিচু ডাটা ইন্টারচেঞ্জ ফরম্যাট, ওয়েব অনটোলজি ল্যাংগুয়েজ (OWL) ইত্যাদি।

এগুলোর প্রতিটিরই উদ্দেশ্য হচ্ছে জ্ঞানের কোনো একটি শাখার মধ্যে ধারণা (concepts), পদ (terms) এবং পারস্পরিক সম্পর্কের একটি আনুষ্ঠানিক বিবরণ প্রদান করা। এরই মধ্যে Twine, Google Squared, Mozilla Ubiquity-সহ বেশ কয়েকটি ওয়েব ৩.০ অ্যাপ্লিকেশন আত্মপ্রকাশ করেছে। অনেকে গুগল ওয়েভকেও ওয়েব ৩.০-র অংশ বলে ধরেন। কিছুদিন আগে ডব্লিউ থ্রি সি কনসোর্টিয়াম (W3C) OWL 2-কে তাদের সিমেনটিক ওয়েব টুলকিটের একটি অংশ এবং অফিশিয়াল স্ট্যান্ডার্ড হিসেবে ঘোষণা করেছে।

এই স্ট্যান্ডার্ড ইউজারদেরকে আরো ভালভাবে তথ্য সংগ্রহ এবং সিমেনটিক টুল ব্যবহার করে তথ্য অনুসন্ধান ও ব্যবস্থাপনা করতে সাহায্য করবে।

এখন দেখা যাক কতদুর কি হয়। এটা কিন্তু ঠিক, ধরতে পারা না গেলেও আমরা যে ওয়েবে নিত্য ঘুরছি ফিরছি, সেটা প্রতিদিনই পরিবর্তন হযে যাচ্ছে। কোন পরিবর্তনই হঠাৎ করে হয় না।

এখানে উল্লেখ করা প্রত্যেকটি বিষয়েই কয়েক পাতা করে কথা লিখে ফেলা যায়। তবে সেটা থাকুক ভবিষ্যেতের জন্য। সামনে আবার প্রত্যেকটি বিষয়ে আলাদা করে লেখা হবে সবার জন্য।

0 comments:

Post a Comment