Search This Blog

কিভাবে আপনার ল্যাপটপটির যত্ন করবেন ?

Tuesday, August 16, 2011

আপনার ল্যাপটপটির যত্ন করবেন কিভাবে?
যত্ন করুন আপনার ল্যাপটপটির
যত্ন করুন আপনার ল্যাপটপটির

ল্যাপটপ বা নোটবুক কম্পিউটারের জনপ্রিয়তা এখন আকাশ ছুঁই ছুঁই বললেও অত্যুক্তি হবে না। এক সময় জনপ্রিয়তা নয়, বরং এর দামই ছিল আকাশছোঁয়া। তখন সীমিত আয়ের মানুষ ল্যাপটপ কেনার কথা ভাবতেও পারতেন না। কিন্তু দিনে দিনে আমাদের আয়ত্বের মধ্যে দামে এসে গেছে ল্যাপটপ, ফলে এর জনপ্রিয়তা যে সাধারণ মানুষের মধ্যে কতটা বেড়েছে সেটি বোঝা যায় কম্পিউটার বা ল্যাপটপ মেলা এলে। মেলায় ঢোকার জন্য মানুষের সারিবদ্ধ দীর্ঘ লাইনই আমাদেরকে এর জনপ্রিয়তা সম্বন্ধে ধারণা দেয়।

যাই হোক, কেনার পর এত সাধের ল্যাপটপটি যদি বেশিদিন কাজ না করে বা আশানুরূপ কাজ না করে তাহলে নিশ্চয়ই দারুণ মন খারাপ হবে? এ কারণেই আজ আমরা জেনে নেব কী করলে (এবং কী না করলে) ল্যাপটপের আয়ু বাড়ানো যাবে এবং দীর্ঘদিন একে চালানো যাবে। আসুন
এক এক করে জেনে নিই।

আপনার ল্যাপটপটি ঠাণ্ডা রাখুন

আপনার ল্যাপটপটি যত গরম হবে ততই এর নানারকম সমস্যার আশঙ্কা বাড়বে। আপনার যদি অভ্যাস থাকে বিছানা বা কাউচের ওপর বালিশ অথবা কুশনকে টেবিল হিসেবে ব্যবহার করে ল্যাপটপ চালানো তাহলে নিজেই নিজের পায়ে কুড়াল মারছেন। কারণ এর ফলে ল্যাপটপটির বাতাস চলাচলের পথ (air vent) বন্ধ হয়ে এটি ক্রমশ্যই গরম হয়ে উঠবে। কম্পিউটারের ভেতরটা গরম বা ঠাণ্ডা রাখার ব্যাপারে সরাসরি আপনার হাত না থাকলেও বাইরে থেকে একে ঠাণ্ডা রাখার উদ্যোগ অবশ্যই আপনি নিতে পারেন। এজন্য ব্যবহার করতে পারেন Cooling pad, যা দুই বা ততোধিক ইউএসবি পাওয়ারড ফ্যান-এর সাহায্যে ল্যাপটপ থেকে তাপ হটায়। বাজারে Antec, DataStor কিংবা Targus কোম্পানির কুলিং প্যাড পাওয়া যায়। ব্যবহার করতে পারেন এগুলো।

বেছে নিন সলিড স্টেট ড্রাইভ

যে কোনো কম্পিউটারেরই দুর্বলতম জায়গা বা ‘অ্যাকিলিস হিল’ হচ্ছে এর হার্ড ড্রাইভ। হার্ড ড্রাইভের ভেতরকার ক্ষুদ্রাকৃতির প্লেটার, রিড/রাইট হেড বা অন্যান্য ‘মুভিং পার্টস’ – সবই খুব স্পর্শকাতর। হাত থেকে পড়ে গেলে, ধাক্কা খেলে বা একটু এদিক সেদিক হলেই হার্ড ড্রাইভটি গণ্ডগোল শুরু করতে পারে। এছাড়াও, প্রচুর পরিমাণে তাপ উৎপাদন করার কারণেও হার্ড ড্রাইভ বিপজ্জনক।

এসব সমস্যারই সমাধান হচ্ছে হার্ড ড্রাইভের জায়গায় সলিড স্টেট ড্রাইভ ব্যবহার করা। নন ভোলেটাইল ফ্ল্যাশ মেমোরি দিয়ে তৈরি এই এসএসডি-র ভেতরে কোনো মুভিং পার্টস নেই, ফলে এটি হার্ড ড্রাইভের চাইতে তুলনামূলক কম তাপ উৎপাদন করে। এছাড়া ঠেলা-ধাক্কা, ভাইব্রেশন বা অতি তাপমাত্রার কারণে এগুলোতে সমস্যা সৃষ্টিও হয় কম। তবে সমস্যা হচ্ছে, সলিড স্টেড ড্রাইভ প্রযুক্তি এখনও উৎকর্ষের চরমে যায়নি, এ কারণে এগুলোর দাম বেশি এবং স্টোরেজ সামর্থ্যও তুলনামূলকভাবে কম। সলিড স্টেট ড্রাইভের ডাটা সংরক্ষণ সামর্থ্য এখনও যেখানে কয়েক’শ গিগাবাইটের কোঠায়, হার্ড ড্রাইভ সেখানে প্রায় টেরাবাইট পরিমাণ উপাত্ত সংরক্ষণ করতে পারে। তবে এসএসডি-র সামর্থ্য দ্রুত বাড়ছে, একই সঙ্গে কমছে দাম। কাজেই সামনের দিনগুলোতে এসএসডি-ই হবে উপাত্ত সংরক্ষণে মানুষের প্রধান পছন্দ।


"  সঠিক ব্যাগ ব্যবহার করলে দুর্ঘটনাজনিত কারনে ল্যাপটপের ক্ষতি ঠেকাতে পারেন আপনি"

সাবধানে বহন করুন আপনার ল্যাপটপটি

গঠনগত কারণেই ডেস্কটপের চাইতে ল্যাপটপ অনেক বেশি স্পর্শকাতর। কাজেই ল্যাপটপকে সাবধানে যেমন ব্যবহার করবেন তেমনি এটিকে সাবধানে বহনও করুন। কোথাও রাখার সময় ছুড়ে মারবেন না অবশ্যই, তার চাইতেও গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে, এটিকে বহন করার জন্য এমন একটি ব্যাগ ব্যবহার করুন যেটি ল্যাপটপটিকে সর্বোচ্চ সুরক্ষা দেবে। ল্যাপটপ কিনতে গেলেই সঙ্গে একটি করে ব্যাগ পাবেন, তবে সাবধানতার জন্য ল্যাপটপের জন্য বিশেষভাবে তৈরি কেস বা ব্যাগ কেনাই ভাল। উদাহরণ হিসেবে টারগাস বা বেলকিন কোম্পানির কথা বলা যায়। তারা বিভিন্ন মোবাইল ডিভাইসের জন্য প্রটেকটিভ কেস তৈরি করে যেগুলো দেখতে যেমন সুন্দর তেমনি খুবই টেকসই। এসব কেসের ভেতর থাকে ‘ডোম প্রটেকশন সিস্টেম’, বিশেষভাবে তৈরি করা সাইডওয়াল, এয়ার প্রটেকশন টেকনোলজি ইত্যাদি। এইসব ব্যাগ ব্যাবহার করলে বেশিরভাগ দুর্গটনাজনিত আঘাত এর হাত থেকে আপনি আপনার ল্যাপটপটিকে বাচাতে পারবেন।

ল্যাপটপের ব্যাটারির যত্ন নিন

যতই সময় যাবে, ল্যাপটপের ব্যাটারির আয়ুও ততই কমতে থাকবে। কত দ্রুত এটি ঘটবে তা নির্ভর করবে আপনি যন্ত্রটার কতটা যতড়ব নিচ্ছেন তার ওপর। সাধারণভাবে মনে করা হয় দেড় থেকে তিন বছরের সাধারণ ব্যবহারের পর আস্তে আস্তে ব্যাটারির আয়ুক্ষয় হতে থাকে। একটি উপায় হল, ব্যাটারি দিয়ে যখন চালাবেন তখন একেবারে ব্যাটারির চার্জ শেষ হওয়ার সতর্কবাণী পাওয়া পর্যন্ত চালাবেন, চার্জ প্রায় শেষ হয়ে এলে পুরোদমে চার্জ দিয়ে তারপর আবার চালাবেন। মাঝখান থেকে চার্জ দিতে শুরু করলে ব্যটারি আয়ুকমে যাবার আশঙ্কা থাকে খুবই। তবে সুযোগ থাকলে সরাসরি মেইন পাওয়ারে চালানোই উত্তম। তবে সপ্তাহে কমপক্ষে একবার থেকে দুবার ব্যাটারীর চার্জ সর্ম্পুন শেষ করে নতুন করে চার্জ দেয়াটা ব্যটারীর জন্য ভাল।


হার্ড ড্রাইভকে রিফরম্যাট করুন

দীর্ঘদিনের ব্যবধানে মানুষের শরীরে যেমন কোলেস্টেরল জমতে থাকে ঠিক তেমনিভাবে কম্পিউটার যতই ব্যবহার করা হতে থাকে ততই এতে ফাইলের ছেড়াখোঁড়া টুকরো, বাতিল রেজিস্ট্রি এন্ট্রি, স্পাইঅয়্যার, ভাইরাস ইত্যাদি জমতে থাকে। এটিকে প্রতিরোধ করার সেরা উপায় হচ্ছে হার্ড ড্রাইভ পুনরায় ফরম্যাট করে অপারেটিং সিস্টেমকে আবার ইনস্টল করা। এটি সময়সাপেক্ষ কাজ হলেও ভাল ফল দেবে। তবে হার্ড ডিস্ক ফরম্যাট করার আগে অবশ্যই সমস্ত গুরুত্বপূর্ণ ডাটা ও ফাইল-এর ব্যাকআপ নিতে ভুলবেন না। এই কাজটি বছরে একবার করলেই আপনি অনেক সুবিধা পাবেন।
এসবের থেকে বড় ব্যাপার হল, আপনার ল্যাপটপের দিকে মনোযোগী ও যত্নবান হওয়া। একটু মনোযোগী হয়ে ব্যবহার করলে, আপনি নিজেই বুঝতে পারবেন কি করা উচিৎ আর কি করা উচিৎ না।

0 comments:

Post a Comment