Search This Blog

একটি আকর্ষনীয় ও দৃষ্টিনন্দন হোমপেজ কিভাবে বানাবেন ???

Tuesday, August 16, 2011


কিভাবে বানাবেন একটি আকর্ষনীয় ও দৃষ্টিনন্দন হোমপেজ।


যে কোনো ওয়েব সাইটের সবচেয়ে গুরুত্বপুর্ন হচ্ছে এর হোমপেজ। ভিজিটররা সাইটে ঢুকলে প্রথমেই মুখোমুখি হয় হোমপেজের, অনেকটা কোনো বাড়িতে ঢুকলে যেভাবে প্রথমে ড্রয়িং রুম চোখে পড়ে সেরকমই। এ কারণে ওয়েব ডিজাইনারদের কাছে হোমপেজ ডিজাইন খুব গুনুত্বপুর্ন। ভাল হোমপেজ ডিজাইন করতে গেলে ডিজাইনাররা প্রথমেই যে দিকে দৃষ্টি দেন তা হল:

এ সাইটটির উদ্দেশ্য কি? সাইটের অবজেকটিভ বা উদ্দেশ্য হোমপেজ ডিজাইনের প্রধান নির্দেশক হিসেবে কাজ করে। ভিজিটররা যে উদ্দেশ্য নিয়ে সাইটটিতে প্রবেশ করেছেন সে উদ্দেশ্য পূরণের প্রয়োজনীয় মালমশলা যেন হোমপেজেই পেয়ে যান সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। ডিজাইন করার সময় মনে রাখতে হবে – ওয়েব সাইটের ‘উদ্দেশ্য’ আর ‘বিষয়বস্তু’ বা টপিক এক জিনিস নয়। উদাহরণস্বরূপ, ‘রিয়েল এস্টেট’ কোনো ওয়েব সাইটের উদ্দেশ্য হতে পারে না। বিষয়বস্তু হতে পারে। আবার বাড়ি বিক্রি করাও উদ্দেশ্য হতে পারে না। কারণ নিজের চোখে জায়গা, অর্থাৎ ‘সাইট’ না দেখে কেবল ওয়েব সাইট দেখে কেউ কি বাড়ি কিনবে? রিয়েল এস্টেট-এর এই উদাহরণটির ধারাবাহিকতা টেনে বলা যায়, রিয়েল এস্টেট নিয়ে কাজ করে এমন একটি ওয়েব সাইটের উদ্দেশ্য হতে পারে:


ক) বিক্রি করা হবে এমন জায়গা বা ভবন দেখানো (শোকেস করা)।

খ) সাম্ভাব্য জমি বিক্রেতা তথা রিয়েল এস্টেট ব্যবসায়ীর সঙ্গে যোগাযোগের উপায় করে দেয়া।

গ) ভিজিটরদেরকে তাদের প্রয়োজনের সঙ্গে মিল রেখে সঠিক রিয়েটইলর খুঁজে পেতে সাহায্য করা।

এ প্রসঙ্গে আরেকটি কথা মাথায় রাখতে হবে। হোম পেজের উদ্দেশ্য আর গোটা ওয়েব সাইটের উদ্দেশ্য যে এক হবে তা নাও হতে পারে। হোম পেজ হচ্ছে স্রেফ একটা এন্ট্রি পয়েন্ট। কোনো পণ্য ক্রয়ে ভিজিটরদের উদ্বুদ্ধ করা সম্পূর্ণ ওয়েব সাইটের উদ্দেশ্য হতে পারে, কিন্তু হোমপেজটির উদ্দেশ্য হচ্ছে সেই ওয়েব পেজটির ভেতরে যেতে ভিজিটরদের সাহায্য করা যেখান থেকে তিনি ঐ পণ্যটি পছন্দ করার সুযোগ পাবেন, ও পছন্দ হলে ক্রয় করার সুযোগ পাবেন। একেবারে ফ্রন্ট পেজেই পণ্য বিক্রয় পর্ব সমাধা করার প্রচেষ্টা বরং হবু ক্রেতাকে বিরক্ত করতে পারে। এখানে নতুন বনাম পুরনো, অর্থাৎ ফিরে আসা ভিজিটরদের মধ্যে পার্থক্যটা বুঝতে হবে।

হোমপেজ বা ওয়েব ডিজাইন করতে গেলে সব সময় মনে রাখতে হবে, ভিজিটর মূলত দু ধরনের:

ক) যারা এর আগে সাইটটি দেখেননি

খ) যারা নতুন বা বেশি কিছু পাবার জন্য সাইটে ফিরে এসেছেন।

‘রিপিট ভিজিটর’ ছাড়া কোনো ওয়েব সাইটের পইে সফল হয়া সম্ভব নয়। একবার যে কোনো ভিজিটরই আসতে পারেন, তাকে বারবার আসতে প্রণোদিত করার মধ্যেই ওয়েব সাইটের সার্থকতা।
ভিজিটরদের বা বার কিভাবে আসতে উৱসাহিত করা যায়?

ক) ওয়েব সাইটের কনটেন্টকে এমনভাবে সাজাতে হবে যাতে ভিজিটর আবারও ভিজিট করতে অনুপ্রাণিত হন।

খ) এমন রিসোর্স তাকে দিতে হবে যা ভিজিটরকে সাইটটি ভিজিট করার কথা মনে করিয়ে দেবে। উদাহরণ হিসেবে জঝঝ ফিডের কথা বলা যায়। সাইটের ইউজার ইন্টারফেস যদি আকর্ষণীয় হয় তাহলে নতুন বা রিপিট ভিজিটররা সাইট ভিজিট করতে উৎসাহী হবেন। যে ডিজাইন ইউজারদের বারবার একটি সাইটে ফিরে আসতে অনুপ্রাণিত করে সেটিকে ‘ব্যবহারকারী কেন্দ্রীক ডিজাইন’ বা ইউজার সেন্টারড ডিজাইন বলা হয়। ব্যবহারকারী কেন্দ্রীক ডিজাইন সেটিই, যে ডিজাইন নিচের প্রশ্নটির উত্তর দিতে পারবে: “আমি যদি এক্স বা ওয়াই কাজটি সারার জন্য এখানে আসি তাহলে কি আমি খুব বেশি ঝামেলা বা চিন্তাভাবনা ছাড়াই দ্রুত কাজটি এখানে সারতে পারব?”

নিজেকে ব্যবহারকারীর জায়গায় চিন্তা করা গেলেই একটি চমৎকার ইউজার সেন্টারড ডিজাইন পরিকল্পনা ও বাস্তবায়ন করা সম্ভব। রিপিট ভিজিটরদের আকর্ষণ করবার জন্য সাইটে ‘সাবক্রিপশন’ অর্থাৎ সাইটটির সদস্য অপশন রাখতে হবে। উদাহরণস্বরূপ ফিকারের কথা বলা যায়। ফিকার (ঋষরপশৎ) একটি জনপ্রিয় ফটো শেয়ারিং ওয়েব সাইট। আপনি মেম্বার নাকি নন মেম্বার হিসেবে ফিকারে প্রবেশ করলেন তার ওপর ভিত্তি করে সাইটটির হোমপেজের ডিজাইন পরিবর্তিত হয়ে যায়। ভিজিটরদের সাইটের ব্যপারে নিয়মিত জানাতে ব্যবহার করতে পারেন নিউজ লেটার। ভিজিটর কে উৎসাহিত করুন তিনি যেন নিউজলেটার এর জন্য তার ই-মেইল ঠিকানাটি সাবস্ক্রাইব করেন। এভাবে আপনি নিয়মিত ভাবে একদল ভিজিটরদেও জানাতে পারবেন, আপনার সাইটে নতুন কিছু এল কিনা অথবা আপনার প্রতিষ্ঠান নতুন কোন বিশেষ অফার দিচ্ছে কিনা যেটা তাকে আগ্রহী করতে পারে।

কনটেন্টকে কার্যকরভাবে হাইলাইট করুন:

হোম পেজের জন্য কোন কনটেন্ট সবচেয় কার্যকর হবে সেটি বাছাই করার সময় নিচের বিষয়গুলোমনে রাখুন:

অগ্রাধিকার নির্ধারণ করুন:

কোন কনটেন্ট এবং কম্পোনেন্টগুলো সাইটের উদ্দেশ্য পূরণের জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপুর্ন তা নির্ধারণ করুন। এখানে যে যে কনটেন্টকে হাইলাইট করতে পারেন তার মধ্যে আছে আপনার জঝঝ ফিড, কনটাক্ট ইনফরমেশন, গুরুত্বপুর্ন অর্জন বা গুরুত্বপুর্ন কাজ ইত্যাদি।

একটি ‘কনটেন্ট-অনলি’ লেআউট তৈরি করুন:

প্রথম ধাপে যেসব কনটেন্টকে নির্বাচন করলেন সেগুলোকে সঠিকভাবে এবং নিজের পছন্দ অনুযায়ী স্থানে বিন্যস্ত করে একটি লেআউট তৈরি করুন। যেভাবে সাজালে গুরুত্ব অনুযায়ী এগুলো ভিজিটরদের চোখে পড়বে সেভাবেই সাজান। লেআউট সাজানোর জন্য ইংরেজি ‘এফ’ অরের আদলে ডিজাইনকে অনেকেই পছন্দ করেন। বামদিকে একদম উপরে মানুষের চোখ পড়ে সবার
আগে। এরপর চোখ যাবে প্রথমে ডানে এবং তারপর নিচে। ইউজার যতই পৃষ্ঠার নিচের দিকে যাবে ততই তাদের আগ্রহ কিন্তু কমতে থাকবে। একই সঙ্গে তাড়া তথ্য পড়বেও কম।

আগ্রহ সৃষ্টি করুন:

সাধারণ লেআউটের বাইরে নির্দিষ্ট কিছু কনটেন্টের দিকে ইউজারদের আগ্রহ জাগানোর আরো কয়েকটি উপায় আছে। এ ধরনের গুরুত্বপুর্ন কিছু ‘লেআউট কম্পোনেন্ট’-এর দিকে ব্যবহারকারীদের আগ্রহ জাগানোর জন্য নিচের সম্ভাবনাগুলোর কথা মাথায় রাখতে হবে: – পটভূমি বা ব্যকগ্রাউন্ড এবং আশেপাশের উপাদানগুলোর সঙ্গে ঐ কম্পোনেন্টটির কনট্রাস্ট বাড়ান, যাতে এটি ব্যাকগ্রাউন্ডের মধ্যে ফুটে থাকে।

- আশেপাশের কম্পানেন্ট-এর তুলনায় এর আকার বাড়িয়ে দিন।

- এর চারপাশে প্রচুর পরিমাণে সাদা জায়গা রাখুন।

মনে রাখুন, হোমপেজ ডিজাইনে বিজ্ঞান যতটা আছে ঠিক ততটাই আছে শিল্প। ডিটেইলের দিকে খুঁতখুঁতে নজর রাখা, সাইটের আদর্শ উদ্দেশ্যেও কথা মাথায় রাখা এবং ওয়েব পেজের পারফরমেন্সের কথা মনে রাখার মাধ্যমেই একটি কার্যকর হোম পেজ ডিজাইন করা যায়।

এবিষয়ে পরবর্তীতে আরও জানাবার ইচ্ছা আছে সবাইকে। আজ এখানেই শেষ। শুভেচ্ছা রইল।

0 comments:

Post a Comment